সাভার প্রতিনিধি:
ঢাকার ধামরাইয়ে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে ও পায়ে শেকল পড়িয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী নুরুল করিম কাঞ্চনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূ চারজনের নাম উল্লেখ করে ধামরাই থানায় মামলা (নং-০৮) দায়ের করেন।
এর আগে বুধবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামে শ্বশুড় বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন ওই গৃহবধূ।
গ্রেফতার গৃহবধূর স্বামী নুরুল করিম কাঞ্চন সূতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামের মৃত রহিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি মানিকগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিসের টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত।
মামলার এজাহার ভুক্ত পলাতক আসামিরা হলেন- গৃহবধূর দেবর রফিকুল ইসলাম অলিদ, স্বামী কাঞ্চনের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হৃদয় চৌধুরী ও জা শাহনাজ চৌধুরী।
এজাহারে বলা হয়, বেলীশ্বর গ্রামের রফিকুল ইসলাম কাঞ্চনের পূর্বের দুই স্ত্রী মারা যায়। প্রথম স্ত্রীর ঘরের হৃদয় নামে এক সন্তান আছে। এরপর নয় বছর আগে হাতকোড়া গ্রামের ভুক্তভোগীকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন কাঞ্চন। বিয়ের পর ভুক্তভোগী ছেলে সন্তানের মা হন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী কাঞ্চন ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। ৫ লাখ টাকা দাবিকৃত যৌতুক না দেয়ায় তাকে শারিরীক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী তার বাবার বাড়িতে চলে যেতেন। বাবার বাড়ি থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা স্বর্ণালংকার এনেও দিয়েছিলেন স্বামীকে। তারপরও যৌতুকের বাকী ২ লাখ টাকার জন্য নাছিমাকে প্রচণ্ড চাপ দেয়া হচ্ছিল। এরই জেরে গত বুধবার নাছিমাকে গাছে বেঁধে ও পায়ে শেকল পড়িয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে বাঁচায়। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর বাবা-মা ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর মা জানান, অনেক আগে থেকেই তার মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করতো স্বামী কাঞ্চন ও তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়াও কাঞ্চনের একাধিক নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। যা তার মেয়ে পরবর্তীতে বুঝতে পারায় তার উপর নির্যাতন করা হতো।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ নিজেই মামলার বাদী। মামলায় ভুক্তভোগীর স্বামীসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। রাতেই বেলীশ্বর এলাকা থেকে স্বামী কাঞ্চনকে গ্রেফতার করেছেন তারা। শুক্রবার দুপুরে আসামিকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে পাঠানো হবে। মামলার বাকী আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।